
নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : বউভাতের অনুষ্ঠানে কোন উপহার নয়, বরং চাই একটা মাত্র সই। এদিন যেসমস্ত নিমন্ত্রিতরাই এসেছেন তাঁদেরই করজোড় করে কাগজে একটি মাত্র সই করার কথা বলেছেন নবদম্পতি। প্রথমে তাঁদের এই অনুরোধে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়লেও পরে জানতে পারেন মৃত্যুর পর স্বেচ্ছায় অঙ্গদান-দেহদান করার জন্য কাগজে সই করার কথা বলা হয়েছে। নব দম্পতির এই নয়া উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকেই।
পাইকপাড়ার সৌম্য মিত্রের সাথে ৩ ফেব্রুয়ারি সাত পাকে বাঁধা পড়েন মধ্যমগ্রামের তুলিকা বসু। এবং বুধবার পাইকপাড়ায় বসে তাঁদের বউভাতের অনুষ্ঠানে। বিয়ের দিন ছাঁদনাতলায় বসেই অঙ্গদান-দেহদানের পরিকল্পনা করেন ওই নবদম্পতি। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। এদিন অঙ্গদান সংক্রান্ত ফর্মে প্রথম দুটি সই করেন পাত্রপাত্রী। পরে তাঁদের দলে যোগ দেন পাত্রর মা, পাত্রীর বাবা-মা সহ মোট ২০ জন। ওই নবদম্পতির কথায়, সংসারজীবনে প্রবেশের দ্বারে প্রিয়জন-পরিজনের সেই মহান শপথই তাঁদের কাছে পাথেয় ও আশীর্বাদ হয়ে থাকবে। বিয়ের দিন এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই সমস্ত ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুদের ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপে এই নবদম্পতি জানিয়ে দেন, “কোনও উপহার আনিস না। শুধু একটা কাগজে সই করে দিস।” প্রথমদিকে তাঁদের এই সিদ্ধান্তকে একেবারেই মেনে নিতে পারেননি. এবিষয়ে পাত্র সৌম্য মিত্র জানান, “যৌতুক নেব না উল্লেখ করে আমি কার্ড ছাপিয়েছিলাম। অভিভাবকরা নাকচ করে দেন। নতুন করে কার্ড ছাপিয়ে ফেলেন। ফলে আমার বউভাতে দু’ধরনের কার্ড ছিল। আমি বন্ধুদের আমার ডিজাইন করা কার্ড দিয়েছিলাম। বাবা-মা তাঁদের পছন্দসই কার্ড দিয়েছেন তাঁদের পরিচিতদের।” সৌম্য-তুলিকার এই অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বেঙ্গল অর্গ্যান ডোনেশন সোসাইটির সভাপতি ক্যাপ্টেন ভি এম স্বামী। তিনি জানান, “দু’দিন আগে ওরা আমাদের পরিকল্পনার কথা জানান। প্রথমে সংকোচ হচ্ছিল। বিয়ের মতো অনুষ্ঠানে এমন উদ্যোগ তো আগে কখনও হয়নি। আমরা পাঁচজনের একটি টিম গিয়েছিলাম। সবমিলিয়ে খুব ভাল সাড়া মিলেছে। কুড়িজন অঙ্গীকার করেছেন।”