শুধু বাঘ নয়, গোটা সুন্দরবনকেই সংরক্ষণের বার্তা

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : শুধু বাঘকে সংরক্ষণ করলেই হবে না, সুন্দরবনের অন্যান্য জীবজন্তু যেমন কুমির, হরিণ, বুনো শূকর, বাঘরোল, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, ম্যানগ্রোভের বনভূমি সহ সর্বোপরি এই এলাকার মানুষকেও বাঁচাতে হবে। এঁদের বাঁচার জন্য যথাযথ পরিবেশ দিতে হবে, তবেই রক্ষা পাবে গোটা সুন্দরবন। যারা সুন্দরবন নিয়ে কাজ করেন, সরকারি সংস্থা, বেসরকারি সংস্থা, সংবাদ মাধ্যম সকলকেই এ কাজে উদ্যোগ নিতে হবে। রবিবার গোসাবার পাখিরালয় গ্রামে বাঘবন নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরির মধ্যে দিয়ে এই বার্তা দিল শের(এসএইচইআর) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন, শেরের সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ কুন্ডু , বিশিষ্ট পরিবেশবিদ তথা অধ্যাপক অরিজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও অনিন্দিতা মজুমদার ও শেরের আরেক সদস্যা সুচন্দ্রা কুন্ডু।

বিগত পনেরো বছরের বেশি সময় ধরে এই সংস্থা সুন্দরবন সহ সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বাঘ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছে। বন দফতরের সাথেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই কার্যত লড়াই চালাচ্ছেন তাঁরাও। সম্প্রতি সর্বপরি জোর দেওয়া হয়েছে বাঘে মানুষে সংঘাত কমানোর উপর। আর এটা তখনই সম্ভব যখন মানুষ আর বাঘের ডেরায় যাবে না। ইতিমধ্যেই বাঘ যাতে নিজেদের ডেরা বা জঙ্গল থেকে লোকালয়ে ঢুকতে না পারে সে কারণে বাঘের জঙ্গলকে একাধিক নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এবার যদি মানুষও জঙ্গলে না যায় তাহলেই এই সংঘাত এড়ানো যাবে।

কিন্তু বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে সুন্দরবনের নদী তীরবর্তী মানুষরা পেটের তাগিদে কখনো জঙ্গলে কাঠ কাটতে, কখনো মধু সংগ্রহ করতে কখনো বা মাছ কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলার মুখে পড়ছেন। এই ঘটনায় একদিকে যেমন বাঘের হানায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই তেমনি অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের হাতেও আক্রান্ত হচ্ছে বাঘ। মানুষ এলাকায় ফিরে চিকিৎসার সুযোগ পেলেও বাঘেদের সেই সুযোগ নেই। তাই এই সংঘাতের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে উভয়পক্ষই। সেই কারণে বাঘে মানুষে সংঘাত কমাতে নানা উদ্যোগ ইতিমধ্যেই নিয়েছে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা। এবার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন বাঘবন।

এই প্রতিষ্ঠানে একদিকে যেমন লাইব্রেরী তৈরি করে এলাকার পড়ুয়াদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে পড়াশুনার ক্ষেত্রে। তেমনি বয়স্ক মানুষ বা যারা বইপ্রেমী, বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে ভালোবাসেন তাঁদেরকেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। অন্যদিকে মহিলাদের স্বনির্ভর করতেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জঙ্গল ছেড়ে যাতে এলাকার মহিলারা সেলাই প্রশিক্ষণ সহ নানা ধরনের হাতের কাজ শিখে নিজেদেরকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করতে পারেন। এছাড়া ইতিমধ্যেই এই সংস্থার তরফে এলাকার সাধারণ মানুষ, স্কুল পড়ুয়াদেরকে জঙ্গল দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা হলেও যারা কোনদিনই সুন্দরবন পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখেননি, যারা জানেনই না গোটা সুন্দরবনে বাঘ ছাড়াও আর কি কি বন্য প্রাণ রয়েছে। বাঘের পাশাপাশি সেগুলিকেও বাঁচাতে হবে।

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube