লোকালয়ে বাঘের আনাগোনা বন্ধ করতে তৎপর বন দফতর

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছেন, তাই এবার আর কোনরকম ঝুঁকিই নিতে চান না বন আধিকারিকরা। সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে যাতে কোনভাবেই বাঘ লোকালয়ে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য সদা সচেষ্ট রয়েছে বন দফতর। সেই কারণে শীত পড়ার সাথে সাথেই সুন্দরবনের জঙ্গলের নাইলনের জাল মজবুত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। যে যে জায়গায় নাইলনের জাল ছিঁড়ে গিয়েছে বা নড়বরে রয়েছে ইতিমধ্যেই সেই জায়গা চিহ্নিত করে সেগুলি দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু করেছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প ও ২৪ পরগনা বন বিভাগ। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ভাসমান ক্যাম্প করেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। তৈরি হয়েছে র‍্যাপিড রেসপন্স টিমও। 

গত বছর সুন্দরবনের একাধিক জায়গায় এই নাইলনের জাল ছিঁড়ে বা জাল টপকে বাঘ ঢুকে পড়েছিল লোকালয়ে। বেশ কয়েক জায়গায় গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছিল বাঘের হামলায়। কুলতলি, মৈপীঠ সহ গোসাবার লাহিড়ীপুর, সাতজেলিয়া ও বালি এলাকায় লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ায় যথেষ্ট আতঙ্ক ছড়িয়েছিল এলাকায়। দিনের পর দিন ঐ এলাকায় পাহারা দিয়ে অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে সেই বাঘকে কখনো খাঁচা বন্দি করে কখনও তাড়িয়ে পুনরায় জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল বন দফতরকে। যাতে এবার সেই পরিস্থিতি না হয় সেই কারণে আগে থেকেই নানা ধরনের সতর্কতামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন বন দফতরের আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই বনকর্মীরা জঙ্গলের যে নাইলন ফেন্সিং রয়েছে সেই নাইলন ফেন্সিংগুলি পরীক্ষা করছেন।

যেখানে যেখানে ফেন্সিং কমজোর রয়েছে সেগুলিকে মেরামত করছেন। পাশাপাশি অনেক জায়গাতেই ফেন্সিং ঝুলে পড়েছে বা ছিঁড়ে গিয়েছে যেখান থেকে বাঘ সহজেই জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে পড়তে পারে, সেগুলিকে দ্রুত চিহ্নিত করে মেরামতি করা হচ্ছে। পাশাপাশি সুন্দরবনের একাধিক জায়গা যেখান থেকে বাঘ বেরনোর সম্ভবনা রয়েছে সেই স্থান চিহ্নিত করে সেখানে ফ্লোটিং(ভাসমান) ক্যাম্প করে সেখানে ২৪ ঘণ্টা পাহাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে বন দফতরের তরফে যাতে কিনা লোকালয়ে বাঘ কোনভাবেই ঢুকতে না পারে। এছাড়াও গ্রামবাসীদের নিয়ে তৈরি র‍্যাপিড রেসপন্স টিম যারা বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত তাঁদেরকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় প্রচুর পরিমাণে নাইলন নেট, বাঁশ মজুত রাখা হয়েছে বন দফতরের তরফে।

২৪ পরগনা বনবিভাগ এলাকায় মোট ৬২ কিলোমিটার এলাকা এই নাইলনের জাল দিয়ে ঘেরা রয়েছে। নতুন করে আরও ১২ কিলোমিটার এলাকা এই নাইলন ফেন্সিং দিয়ে ঘেরা হবে বলে বন দফতর সূত্রের খবর। পাশাপাশি লোকালয়ে বাঘ ঢোকা আটকাতে এই ডিভিশনের মোট ৪ টি জায়গায় ভাসমান ক্যাম্প করে ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় মোট ১০৬ কিলোমিটার এলাকার নাইলন নেট পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রায় চল্লিশ শতাংশ এলাকার নেট পুরাতন হয়ে যাওয়ার কারণে বদলে ফেলা হয়েছে। গত অক্টোবর মাস থেকেই এই কাজ শুরু করেছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। পাশাপাশি ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে জানুয়ারি মাসের শেষ পর্যন্ত আরো নজরদারি বাড়ানো হবে, ক্রমাগত ভ্রাম্যমাণ নজরদারি ও চলবে বলেই উদ্যোগ নিয়েছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প।

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube