
নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : ।। প্রসেনজিৎ সাহা ।।
সালটা ২০০৮। দিনটা ছিল ১৪ই মে, পঞ্চায়েত ভোটের দিন। আরএসপি ও সিপিএমের মধ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বাসন্তীর আমঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর তালদা গ্রাম। আর সেইদিন রাজনৈতিক হিংসায় নিজের মেয়ে কনক হালদারকে চোখের সামনে গুলি খেয়ে মরতে দেখেছেন পদ্মবালা হালদার। শুধু নিজের মেয়ে নয়, পরিবারের আরও দুই সদস্য রামকৃষ্ণ হালদার ও মধুসূদন হালদারকেও গুলি খেয়ে মরতে দেখেছেন। নিজেও গুলি খেয়েছেন পদ্ম। খোয়া গিয়েছে বাঁ হাত। সেদিনের সেই ঘটনা আজও তাঁর কাছে তাজা। পঞ্চায়েত ভোট এলেই সেই আতঙ্ক যেন আবারও গ্রাস করে পদ্মকে। পনেরো বছর আগে পঞ্চায়েত ভোটের দিন রাজনৈতিক সংঘর্ষে শুধুমাত্র তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাই যান নি, আরও সাতজন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। পদ্ম একটা হাত খুইয়েছেন, অন্যান্যরাও বরাত জোরে প্রাণে বেঁচেছেন। ঘটনার পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত দোষীরা শাস্তি পাননি বলে ক্ষোভ রয়েছে গ্রামের অনেকের মনেই। সেই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন ভরত চন্দ্র হালদার। তার দাবি এতোগুলো খুনের পর আজও তারা শান্তিতে নেই। রাজ্যে যেমন পালা বদল হয়েছে, তেমনি পালা বদল হয়েছে বাসন্তীতেও। বামেদের সরিয়ে এখানেও বিধানসভা থেকে শুরু করে গ্রাম পঞ্চায়েত সবেতেই তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু পুরাতন সেই লড়াই, সেই রেষারেষি এখনও চলছে। এই উত্তর তালদা গ্রাম যেন এখনও ছাই চাপা আগুনের মতোই রয়েছে। পরিবর্তনের সাথে গা ভাসিয়ে গোসাবার প্রাক্তন বিধায়ক জয়ন্ত নস্করের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ভরত ও তাঁর গোটা পরিবার। এলাকার অন্যান্য আরএসপি কর্মীদের অনেকেই তাঁদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। কিন্তু ওপর গোষ্ঠীও সেই পরিবর্তনের ধারায় গা ভাসিয়ে নাম লিখিয়েছে তৃণমূলে। তবে যুব সংগঠনে। ফলে আরএসপি সিপিএমের লড়াই এখন তৃণমূলের যুব ও মাদার গোষ্ঠীর লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে নতুন করে ঠিক এই গ্রামে অশান্তি না হলেও এই আমঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আশপাশের গ্রামে ইদানিং একাধিক বোমা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি, গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি এই আমঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভারতীর মোড় এলাকার খাঁপাড়ায় বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হয়েছিলেন চারজন। একাধিক জায়গায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে মাঝে মধ্যেই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। ফলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাসন্তীতে যে বোমা মজুত শুরু হয়েছে তা এক প্রকার পরিস্কার। পঞ্চায়েতের দখল কাদের হাতে থাকবে তা নিয়েই এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। ভোটের দিন ঘোষণা এবং টিকিট ঘোষণা হলেই এলাকায় সন্ত্রাস, উত্তেজনা বাড়বে বলে আতঙ্কিত এলাকার সাধারণ মানুষ।Latest posts by news_time (see all)
- দেখা দিলেন বিগ বি - March 27, 2023
- প্রতিবাদী ইসরায়েলের নাগরিকরা - March 27, 2023
- তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে উত্তপ্ত পূর্ব মেদিনীপুর - March 27, 2023