সোমবার থেকেই টেলিফোনে ক্লাস শুরু প্রথম থেকে অষ্টম

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : মঙ্গলবার রাতেই স্কুল খোলার গাইডলাইন বার করে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। আর বুধ সকালেই জানা গেল রাজ্যে আগামী সোমবার থেকেই টেলিফোনে ক্লাস শুরু হয়েছে যাচ্ছে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেনীর জন্য। তবে এখনই স্কুল খুলছে না বাংলায়। কার্যত কেন্দ্র গাইডলাইন দিলেও রাজ্যে করোনার পরিস্থিতি দেখে রাজ্য সরকার পুজোর আগে স্কুল খুলতে ইচ্ছুক নয়। পুজোর পর পরিস্থিতি দেখে স্কুল খোলার পথে হাঁটা দিতে পারে রাজ্য সরকার। অন্তত নবান্ন সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। অবশ্য রাজ্যে আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে টেলিফোনের মাধ্যমে নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাস। তাতে মিলেছে সাফল্যও। তাই এবার পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ফোনে ক্লাস নেওয়ার পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার।

লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় ধাক্কা খেয়েছে পঠনপাঠন। অনলাইনে পঠনপাঠন চললেও অসংখ্য পড়ুয়াকে চূড়ান্ত দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। কোনও পড়ুয়ার পক্ষে স্মার্টফোন কেনা সম্ভব হচ্ছে না, কারোর আবার স্মার্টফোন থাকলেও নেট সংযোগ দুর্বল হওয়ায় অনলাইন পঠনপাঠন কার্যত শিকেয় উঠেছে। সেই পরিস্থিতিতে গত মাসের গোড়ার দিক থেকে নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের টেলিফোনের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া শুরু হয়। তখনই জানানো হয়েছিল, পরবর্তীতে সব শ্রেণির পড়ুয়াদের এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হবে। সেইমতো এবার পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদেরও টেলিফোনের মাধ্যমে ক্লাস হবে।
 
পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের টেলিফোনে পঠনপাঠনের জন্য একটি টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হচ্ছে। তাতে ফোন করে শিক্ষকদের থেকে পড়া বুঝে নিতে পারবে পড়ুয়ারা। স্কুল শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, স্কুল খোলা থাকলে অগস্ট পর্যন্ত যতটা পড়াশোনা হত, সেই পাঠ্যক্রমের উপর ভিত্তি করেই টেলিফোনে ক্লাস চলবে। রাজ্যজুড়ে প্রায় ৩,০০০ শিক্ষক-শিক্ষিকাকে এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। কীভাবে ক্লাস নিতে হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যে তাঁদের প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। তার ভিত্তিতে আগামী সপ্তাহ থেকেই পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা টেলিফোনে ক্লাস শুরু করে দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে গতকাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে বার করা হয়েছে স্কুল খোলার গাইড লাইন বা এসওপি। সেখানে বলা হয়েছে, সংক্রমণ এড়াতে সমস্ত কোভিড বিধি মেনেই স্কুলে আসতে হবে এবং স্কাস করতে হবে। ছাত্রছাত্রীরা নিয়ম পালন করছে কি না, সেদিকে নজর রাখবেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও স্কুলের অন্যান্য স্টাফরা। সংক্রমণ এড়াতে ৬ ফুটের দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। মুখে সর্বদা মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক। সময়ে সময়ে সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে হবে। হাঁচি বা কাশির সময় মুখ চেপে রাখতে হবে। অসুস্থ থাকলে আগেভাগে স্কুলকে জানাতে হবে। স্কুল চত্বরে প্রকাশ্যে থুতু ফেলা যাবে না।
 
এছাড়াও সেখানে বলা হয়েছে যে, শুধুমাত্র কনটেনমেন্ট জোনের বাইরের স্কুলগুলিই খোলা হবে। কোনও শিক্ষক কিংবা পড়ুয়া যাঁরা কনটেনমেন্ট জোনের মধ্যে থাকেন, তাঁরা স্কুলে যেতে পারবেন না। যে সমস্ত স্কুলগুলো কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলিকে ভালভাবে স্যানিটাইজ করে তবেই পঠনপাঠন শুরু করা হবে। আপাতত ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়েই স্কুলের কাজ চালাতে হবে। পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তারা চাইলে অনলাইন ক্লাসও করতে পারে। তবে অভিভাবকের লিখিত অনুমতি নিয়েই বিদ্যালয়ে আসতে পারবে তারা। একই সঙ্গে স্কুলে বায়োমেট্রিকের ব্যবহার আপাতত বন্ধ থাকবে। স্কুল খোলার আগে প্রার্থনা বা স্কুলের মাঠে খেলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকছে। ক্লাসে কিংবা স্টাফ রুমে এসির ব্যবহার করা হলে তার তাপমাত্রা ২৪ থেকে ৩০ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্কুলের লকার রুম ব্যবহার করা যেতে পারে। যদিও নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে কেন্দ্র যতই গাইডলাইন বার করুক না কেন পুজোর আগে স্কুল খোলা হচ্ছে না।

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube