সংক্রান্তির আগেই গঙ্গাসাগরে পূন্যার্থীরা, তৎপর প্রশাসন

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : ।। প্রসেনজিৎ সাহা ।।

সকাল থেকেই সাগর মেলা চত্বরে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী। আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার বিকেল থেকে মকর সংক্রান্তির পূণ্য স্নান শুরু হবে। কিন্তু তার আগে থেকেই লক্ষ্ লক্ষ্ পূন্যার্থী দেশ তথা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপস্থিত হয়েছেন গঙ্গাসাগরের কপিল মুনির প্রাঙ্গণে। মকর সংক্রান্তি তিথির আগেই স্নান সেরে কপিলমুনির মন্দিরে পূজো দিয়ে পূর্ণ অর্জন করছেন তারা। যাতে কোথাও কোন রকম অসুবিধা না হয় পুনার্থীদের, সেদিকে যথেষ্ট তৎপর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।

করোনা মহামারি কাটিয়ে চলতি বছরে গঙ্গাসাগর মেলায় পুন্যার্থীদের ঢল নামবে বলেই আশাবাদী দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। আর সেই কারণে এবার বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ, কোস্টগার্ড, নেভির পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরও যথেষ্ট তৎপর সাগরতটে। এছাড়াও বাড়তি নিরাপত্তা ও নজরদারির জন্য এবার এনডিআরএফের তরফে সাগর তটে নিয়ে আসা হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত লিলি ও রোমিওকে। সাগরমেলায় আসা লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী সাগরস্নানের সময় কোন বিপদে পড়লেই ত্রাতা হিসেবে কাজ করবে এই জুটি। সমুদ্রে ডুবন্ত পুণ্যার্থীদের সঠিক লোকেশন জানিয়ে দেবে প্রশিক্ষিত ডুবুরিদের।

এনডিআরএফ কলকাতার সেকেন্ড ব্যাটেলিয়ানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর লিলি ও রোমিও। এনডিআরএফের তিনটি ব্যাটিলিয়ানের মোট ৭৫ জন কর্মী এবার গঙ্গাসাগর মেলায় বিপর্যয় মোকাবিলায় কাজ করবে। সাগরমেলা প্রাঙ্গন, কচুবেড়িয়া ও চেমাগুড়ি পয়েন্ট মোতায়েন আছে এরা। আর এদের সাথেই সমান পাল্লা দিয়ে কাজ করবে রোমিও ও লিলি। এছাড়াও এবার রিমোট পরিচালিত লাইফ বয়া নিয়ে আসা হয়েছে ডুবন্ত পুন্যার্থীদের উদ্ধারের জন্য।

চলতি বছরে শনিবার সকাল থেকে গঙ্গাসাগরে মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান। সেদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত শাহী স্নানের পূর্ণযোগ রয়েছে। এই মাহেন্দ্রক্ষণে পুণ্যার্থীরা দলে দলে সমুদ্রে স্নান সেরে পুজো দেবেন কপিলমুনির মন্দিরে। তার উপর গত কয়েক বছরে সমুদ্রের জলস্তর বেড়েছে। জোয়ারের সময় জলস্তর বাড়ছে প্রতিনিয়ত। ফলে সমুদ্রে স্নানে নেমে পুণ্যার্থীরা ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে যাওয়ার উপক্রম হলে তাঁদের উদ্ধার করতে বিশেষ সাহায্য করবে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই দুটি কুকুর।

এর পাশাপাশি এনডিআরএফের কর্মীরা রিমোটের সাহায্যে সমুদ্রের ১০০ মিটার অভ্যন্তরে ইউ আকৃতির লাইফ বয়া মুহূর্তের মধ্যে পাঠিয়ে সেই ডুবন্ত পুন্যার্থীদের উদ্ধার করবে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের এই নয়া পন্থা এবার গঙ্গাসাগর মেলায় যথেষ্ট তৎপরতার সাথে কাজ করবে বলেই দাবি আধিকারিকদের।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দুটি ল্যাব্রেডোর প্রজাতির। দীর্ঘক্ষন সাঁতার কাটতে পারার কারণেই তাঁদেরকে এ কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে যদি সমুদ্রতট থেকে পূণ্যার্থীদের কেউ তলিয়ে সমুদ্রের অনেকটা দূর চলে যায়, তখন রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ইউ আকৃতির লাইভ বয়া পাঠিয়ে উদ্ধার করা হবে তাঁদেরকে।

এই লাইফ বয়া ঘন্টায় প্রায় কুড়ি কিলোমিটার গতিতে উত্তাল ঢেউ কাটিয়ে পৌঁছে যাবে ডুবন্ত মানুষের কাছে। ফলে উদ্ধার কাজ চালাতে অনেকটাই সহজ হবে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গঙ্গাসাগরের উপকূলে এনডিআরএফ দলের সদস্যরা স্পিডবোটে করে টহল দেওয়ার পাশাপাশি দুটি কুকুর ও ইউসেপ লাইভ বয়া নিয়ে মহড়া দেন।

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube