শতাব্দী প্রাচীন টালা ট্যাঙ্কের গায়ে উঠবে নীল-সাদা রং

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : দশকের পর দশক পেরিয়ে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম পেরিয়ে টালা ট্যাঙ্ক কলকাতা সংলগ্ন মানুষের জীবনযাত্রার অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে।কখনও ভূমিকম্প, কখনও জাপানি বোমা কখনও বা আমফান, একের পর এক বিপর্যয়কে নগণ্য করে আজও দাঁড়িয়ে আছে টালা ট্যাঙ্ক। স্থাপিত হয়েছিল ১৯০৯ সালে। ১৯০১ সালে তৎকালীন কলকাতার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আর্থার পিয়ার্স টালা ট্যাঙ্ক বানানোর প্রস্তাব দেন।এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার ম্যাকাবে টালা ট্যাঙ্কের নকশা বানান।এরপর বাবু খেলাতচন্দ্র ঘোষের দেওয়া সাত বিঘা জমিতে গড়ে ওঠে টালা ট্যাঙ্ক।

টালা ট্যাঙ্ক তৈরি হওয়ার কয়েক বছর পরেই নেমে আসে বিপর্যয়।১৯৩৪ সালে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয়, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৮। কিন্তু টালা ট্যাঙ্ক থেকে যায় অক্ষত। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হতেই আবারও বিপদের মুখে পড়ে টালা ট্যাঙ্ক। জাপানি বোমারু বিমান তখন কলকাতাকে কেন্দ্রবিন্দু বানিয়েছে।যখন তখন বৃষ্টির মতো ঝড়ে পড়ছে বোমা।টালা ট্যাঙ্ককে এই জাপানি বোমার হাত থেকে বাঁচাতে ঢেকে ফেলা হয় সবুজ ঘাসে। সেই যাত্রায় রক্ষা পায় টালা ট্যাঙ্ক।

এরপর আমফানের প্রভাবে টালা ট্যাঙ্কের ক্ষতি আশঙ্কা করা হয়। ঝড় আসার আগে টালা ট্যাঙ্ক জলে ভর্তি করা হয়। যাতে হাওয়ার দাপট ট্যাঙ্কের কোনও ক্ষতি না করতে পারে। আমফানও টলাতে পারেনি টালা ট্যাঙ্ক। মাঝে রব উঠেছিল টালা ট্যাঙ্কের জল বিষাক্ত। কিন্তু সেইরকম কোনও ঘটনা বা প্রভাব দেখা যায়নি।এই এতগুলো বছরেও কমেনি টালা ট্যাঙ্কের প্রয়োজনীয়তা। বরং টালা ট্যাঙ্ক হাজার হাজার মানুষের ‘জীবনের’ যোগান দিচ্ছে।

ঐতিহ্যবাহী টালা ট্যাঙ্কে এতদিন ছিল লাল রং।এবার সেই টালা ট্যাঙ্কের গায়ে উঠবে নীল সাদা রং।সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে ট্যাঙ্ককে রক্ষা করতে লিটার বিশেষ রং আনানো হবে।কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের তরফে এই রং আনাতে খরচ হবে ১৪ কোটি টাকা।বাম জমানাতেও যে ঐতিহ্যবাহী টালা ট্যাঙ্কের রং বদলায়নি, তৃণমূলের জমানায় সেই ঐতিহ্যে রাজনৈতিক রং লাগবে। এই ঘটনাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।      

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube