মস্কোয় ভারত-চিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বৈঠক, ‘আপোস নয়’-বার্তা শ্রিংলার

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনা বাড়ছে। তার মধ্যেই সীমান্ত বিরোধ সমাধানে শুক্রবার মস্কোয় চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেংঘে সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রায় ২ ঘন্টা ২০ মিনিট ধরে চলে বৈঠক। সেখানে উপস্থিত বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা স্পষ্ট ভাষায় জানান, ১৯৬২ সালে ইন্দো-চিন যুদ্ধের পর এই প্রথম প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি ‘নজিরবিহীন’।

গত শনিবার ভারতীয় সেনা প্যাংগং লেকের দক্ষিণে একাধিক পাহাড়ের চূড়ো দখল করে নেওয়ার পরে চুশুল সেক্টরে উল্লেখজনক ভাবে সেনা সমাবেশ বাড়াতে শুরু করে চিন। লেকের দক্ষিণে মলডোর কাছে অতিরিক্ত ট্যাঙ্কবাহিনী মোতায়েন করেছে তারা। বেড়ে গিয়েছে সাঁজোয়া গাড়ির আনাগোনাও। পাল্টা জবাবে রেচিন লায় স্পর্শকাতর উঁচু স্থানগুলি দখল করে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে ভারতও। এরপরই সাংহাই কর্পোরেশন বৈঠকের মাঝেই ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার আর্জি জানান চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ওয়েই ফেংঘে। সেই আর্জি মেনেই হয় বৈঠক।

প্যাংগং লেকের উত্তর অংশ ও গোগরা পোস্ট থেকে সেনা না সরাতে অনড় লালফৌজ। তবে এই বৈঠকের পর পরিস্থিতি বদলাতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি।

মস্কোর মেট্রোপোল হোটেলে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্সের সেমিনারে বিদেশ সচিব শ্রিংলা বলেছেন, ‘দেশের অখণ্ডতা সবচেয়ে আগে। নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার সঙ্গে কোনও আপোস করা হবে না। ভারত যেহেতু দায়িত্বশীল দেশ তাই শান্তি আলোচনার পথ খোলা রাখবে। উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টাও করা হবে।’

এর প্রশ্নের জবাবে শ্রিংলা জানান, ১৯৬২-র পর চিন সীমান্তে এমন সমস্যা তৈরী হয়নি। বর্তমানননঅবস্থা ‘নজিরবিহীন’। চিন যে বিপুল সংখ্যক সৈন্য নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন করেছে সেই কথাও তুলে ধরেন তিনি। বিদেশসচিব জানিয়েছেন যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সীমান্ত সমস্যা প্রভাব ফেলতে বাধ্য। এর ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, পারস্পরিত সহযোগিতা ব্যহত হচ্ছে।

বিদেশ সচিব বলেছেন, ‘গত কয়েকদশক ধরেই দুই দেশের সীমান্ত সমস্যা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত সবসময়েই শান্তির পথে সমাধানের লক্ষ্যে এগিয়েছে। কখনও চায়নি সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হোক, দু’তরফের সেনারই প্রাণহানি হোক। শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য ভারত-চিন সেনা ও কূটনৈতিকস্তরে আলোচনা চলছে। কিন্তু অন্যায়ভাবে অনুপ্রবেশের চেষ্টাও মেনে নেওয়া হবে না।’

চিনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে চিনকে বার্তা দিয়ে রাজনাথ বলেন, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে গেলে সবচেয়ে আগে দরকার বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষা করা। আগ্রাসন দেখিয়ে জোর করে অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে। আন্তর্জাতিক নীতিকে ভিত্তি করে দুই দেশ শান্তির শপথ নেবে।

পাশাপাশই শুক্রবার ব্রিক সম্মেলনে ভিডিও বৈঠছকে হাজির হন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে উপস্থিত ছিলেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সেখানে আফগানিস্থান ও পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।

 

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube