বিয়ের রিসেপশন! নিমন্ত্রনে ফেলুদা, আপ্যায়ন করলেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : যত দিন যাচ্ছে ততই বদলাচ্ছে মানুষের ভাবনা চিন্তা। বর্তমান হাইটেক যুগে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বদলে যাচ্ছে সব কিছুই। বাড়ি, গাড়ি, আসবাব পত্রের পাশাপাশি বদল লেগেছে বিয়ের নিমন্ত্রনও। ঐতিহ্যের সাথে আধুনিকতার মেল বন্ধনে নতুন এক বিয়ের আমন্ত্রণ পত্র এবার দেখল বাংলা। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে সেই আমন্ত্রণ পত্র।

দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুরের বাসিন্দা সৌভিক ঘোষ ও রাজশ্রী ভট্টাচার্য। দুজনেই খুব ভাল বন্ধু। আর সেই বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। অবশেষে ফেব্রুয়ারিতে দুজনের চার হাত এক হল। বুধবার অর্থাৎ ১৯শে ফেব্রুয়ারি ছিল সৌভিক ও রাজশ্রীর রিসেপশন। সেই রিসেপশনের নিমন্ত্রন কিভাবে করা হবে, অল্প সময়ের মধ্যে কিভাবে সেই নিমন্ত্রন পত্র সকলের কাছে  পৌছনো যায়, যারা কাছে আছেন তাদের কাছে তো বটেই যারা দূরে আছেন তাদের কাছে ও যাতে দ্রুত সেটিকে পৌঁছে দেওয়া যায়, সব থেকে বড় কথা নিমন্ত্রন পত্রে অব্শ্যই থাকতে হবে  আন্তরিকতা।  এসব নিয়ে ভাবতে গিয়েই নতুন ধরণের নেমন্ত্রন পত্র বের করে ফেলেছেন দুজনে। একটি ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে ডিজিটাল নেমন্ত্রন পত্র পাঠিয়ে কার্যত সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এই সৌভিক ও রাজশ্রী।

শুধুমাত্র ডিজিটাল নিমন্ত্রনের বিষয় নয়, সৌভিক ও রাজশ্রীর রিসেপশনের নিমন্ত্রন পত্রে সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত ছবি জয় বাবা ফেলুনাথের প্রদোষ মিত্র ও মাখনলাল মেঘরাজের কথোপকথন তুলে ধরে বানানো হয়েছে। বিয়ের নিমন্ত্রনে এই নতুনত্বের জন্য সকলেই সৌভিক ও রাজশ্রীর প্রশংসা করেছেন। শুধু বিয়ের নেমন্তন্ন পত্র নয়, রেসেপশানের অনুষ্ঠানে গিয়ে দেখা মিলল ভুতের রাজা থেকে শুরু করে অপুর সংসারের ছোঁয়া।

কিন্তু এত কিছু থাকতে সত্যজিৎ রায় কেন? বর্তমানে মুম্বইয়ে একটি মাল্টি ন্যাশানাল কোম্পানিতে কর্মরত হলেও ছোট থেকেই সত্যজিৎ রায়ের বড় ফ্যান সে। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে পড়াশুনা করার সময় থেকেই সত্যজিৎ রায়ের প্রতি প্রেম। সৌভিকের বন্ধু বান্ধব থেকে শুরু করে সৌভিক নিজেও জানিয়েছেন সত্যজিৎ রায়ের সমস্ত ছবি থেকে শুরু করে, সেই ছবি গুলির চরিত্র, শুটিং লোকেশন, অন্যান্য কাজ সবকিছুই যেন সৌভিকের নখদর্পণে। আর যার প্রতি এত ভালোবাসা নিজের জীবনের অন্যতম মাইলস্টোন ছুঁতে যাওয়ার সময় কোথাও সে থাকবে না তা আবার হয় নাকি? সেই কারণেই নিজের বিয়ের নিমন্ত্রনে সত্যজিৎ রায় ছাড়া ভাবতে পারেনি বলে দাবী সৌভিক ও তার বন্ধুদের।

সৌভিক ও রাজশ্রী দুজনে মিলে প্ল্যান করেই এই ডিজিটাল নিমন্ত্রন কার্ড করেছেন। বিয়েতে ছাপা কার্ডে হলুদ, সিঁদুরের ফোটা দেওয়ার রেওয়াজ সব বাঙালি পরিবারেই আছে। কিন্তু এই অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে নিমন্ত্রন করতে গিয়ে পরিবারের কোন বাধা আসেনি বলেই জানান সৌভিক। উল্টে এই নতুন পদ্ধতিকে সকলেই খুব সাদরে গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ১৯শে ফেব্রুয়ারি বিয়ের রিসেপশনে এসেও তাই আমন্ত্রিতদের মধ্যে এই নিমন্ত্রন পত্র নিয়ে দীর্ঘক্ষণ চলেছে আলোচনা।

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube