প্রয়াত পিতার স্মৃতিচারণে অভিনেতা চঞ্চল

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। দুই দেশ থেকে একের পর অনেক কাজ তাঁর হাতে।কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছিল তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘হাওয়া’। মুক্তি পেয়েছে ওয়েব সিরিজ ‘কারাগার’। কিছুদিন পর থেকেই শুরু হবে সৃজিত মুখার্জী পরিচালিত ‘পদাতিক’ সিনেমার শ্যুটিং। অনেক ব্যস্ততা, কিন্তু এরই মাঝে অভিনেতার মন কেঁদে উঠছে ‘যে জন চলে গেছে’ তাঁর জন্য।গত ২৭ ডিসেম্বর প্রয়াত হয়েছে, চঞ্চল চৌধুরীর বাবা। তাঁর স্মৃতিচারণে আবারও আবেগপ্রবন হয়ে পড়লেন অভিনেতা।

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে আজ সকালেই একটি পোস্ট করেছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।সেই লেখার প্রতিটি পরতে লুকিয়ে রয়েছে বাবার জন্য ছেলের ভালবাসা, সম্মান, হারিয়ে ফেলার বেদনা। ফিরে গিয়েছেন নিজের শৈশবে। তখন কেমন ছিলেন তাঁর বাবা, সে কথা লিখেছেন। অভিনেতার বয়স যত বাড়ল, বাবাকে পেলেন নতুনভাবে। সেই বদলের কথাও লিখেছেন ফেসবুকের সেই পোস্টে।

ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে তফাৎ রেখে চলতেন চঞ্চল। বদলে ঘনিষ্ঠ ছিলেন মায়ের সঙ্গে। বাবাকে ভয় পেতেন চঞ্চল। ছোটবেলায় দেখেছেন, তাঁর বাবা বেশ রেগে থাকেন। বাবার খারাপ মেজাজের কারণ অনুধাবন করতে পেরেছিলেন চঞ্চল। পড়তে বসে ভুল করলেই তাঁর কপালে জুটতো চড়-থাপ্পড়।তাই বাবার সঙ্গে ইচ্ছে থাকলেও গলা মেলাননি কোনদিন। অভিনেতা লিখছেন, ‘প্রত্যেকটা সন্তান ছোট বেলা থেকেই মায়ের গলায় ঝুলে থাকে,মানে কারনে অকারণে মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে থাকেযেটা আমিও করেছি,এখনো সুযোগ পেলেই মায়ের গলা জড়িয়ে ধরি।কারন একটা,ভালো লাগে,শান্তি লাগে….ঐশ্বরিক সুখ পাই।’

অভিনেতা লিখছেন,’বাবার ব্যাপারটা একটু ভিন্ন ছিল শুরু থেকেই, অন্যদের কথা বলতে পারবো না, আমারটা বলি, বাবার গলা জড়িয়ে ধরাতে আমি ছোট বেলায় কখনই সাবলীল ছিলাম না।বেশ ভয়ই পেতাম ছোটবেলায়,যদি থাপ্পড় টাপ্পড় মারে।বাবার মধ্যে একটা গুরু গম্ভীর ব্যাপার দেখতাম,সেই সাথে মনে হয় অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের কারনেও তাঁর মেজাজটা প্রায়শই উচ্চে অবস্থান করতো।সে কারনেই গলা জড়িয়ে ধরা তো দুরের কথা,পারতপক্ষে সামনে খুব কম যেতাম।’

তবে সেই জড়তা কেটে যায় একটু বয়স বাড়তেই। এরপর অভিনেতা যুযোগ পেলেই জড়িয়ে ধরতেন বাবাকে।বাবার বুকের স্পন্দন শুনতেন। বাবার মৃত্যুর আগে শেষবার কবে জড়িয়ে ধরেছেন তাঁকে, মনে করেছেন সেই দিনের কথা। চঞ্চল লিখছেন, ‘বাবাকে শেষ জড়িয়ে ধরেছিলাম,মাস দুয়েক আগে,আমার বাসায়।

তারপর বাবা বাড়ি ফিরে গেল।৩০ দিন আগে ঢাকা ফিরলো অসুস্থ্য অচেতন অবস্থায়।হাসপাতালে বিছানায় অচেতন অবস্থায় ১৫ দিন থেকে,হারিয়ে গেল কোথায় যেন। আর আমাদের গলা জড়িয়ে ধরা হলো না।’

বাবার উদ্দেশে লেখার প্রতিটি শব্দে পিতৃহারা পুত্রের শোকের বেদনা স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে উঠেছে। গতকাল সম্পন্ন হয়েছে চঞ্চল চৌধুরীর বাবা রাধা গোবিন্দ চৌধুরীর পারলৌকিক ক্রিয়া। সেই অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত হয়েছিলেন, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন অভিনেতা।বাবার জন্য প্রার্থনা করতে বলেছেন সকলকে।

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube