
নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : দিল্লিতে যে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে তা পূর্ব পরিকল্পিত, এবং পরে এতে সাম্প্রদায়িক রং চড়ানো হয়েছে, এমন কথাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে নেতাজী ইন্ডোরে নয়া কর্মসূচী প্রকাশের মঞ্চে বিরোধিতা থেকে দলীয় কার্যকলাপ সবকিছু ছুঁয়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য। এদিন তিনি বলেন, দিল্লিতেও গুজরাট মডেল এনেছেন মোদী। দেশের রাজধানীতে গণহত্যা চলছে আবং দিল্লি পুলিশ তা দাঁড়িয়ে দেখছে।
এই অনুষ্ঠানের ঠিক একদিন আগে শহরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের শহীদমিনারের সভার মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন, বাংলায় অরাজকতা সীমা ছাড়িয়েছে। সিন্ডিকেট রাজ, নির্বাচনে কর্মসূচিতে কারচুপি ইত্যাদি সমস্ত শেষ করবে বিজেপি। তিনি এও বলেন, সিএএ নিয়ে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে তৃণমূল সরকার। এরই পাল্টা উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যাঁরা দিল্লির মত ছোটো একটি এলাকা সামলাতে পারেনা, তারা দেশ সামলানোর কথা বলেন। বিজেপি সরকারের মদতে জাত পাত নিয়ে অগ্নিগর্ভ দিল্লি। যথেচ্ছ উস্কানিমুলক মন্তব্য করেও পার পেয়ে যাচ্ছে বিজেপির নেতা মন্ত্রীরা, তাদের বিরুদ্ধে কোনোরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা। বাংলায় এইসমস্ত মেনে নেওয়া হবেনা। বাংলা গোটা বিশ্বকে মানবতা শিখিয়েছে, বাংলায় ধর্মিয় হিংসা করা যাবেনা। এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল তৃণমূলের নতুন কর্মসূচি বাংলার গর্ব মমতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। এই বিষয়ে কথা বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি বলেন ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম ধারক ও বাহক তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এসে পৌঁছতে হবেনা, বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পৌঁছবে মানুষের দরজায়। প্রসঙ্গত, এই বাংলার গর্ব মমতা হল ৭৫ দিন ব্যাপি একটি জনসংযোগ কর্মসূচি। যা চলবে ২রা মার্চ থেকে ১০ই মে পর্যন্ত। এই কর্মসূচিতে প্রায় ৭৫ হাজারের থেকেও বেশি দলীয় নেতা ও তৃণমূল স্তরের কর্মি ১৫ হাজার জনবসতিতে যাবেন ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। এইভআবে প্রায় ২.৫ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছবে তৃণমূল কংগ্রেস। এই কর্মসূচির মাধ্যমে মূলত মানুষের সঙ্গে দলের সম্পর্ক পুণরুজ্জিবিত করার চেষ্টা করবে তৃণমূল। এই কর্মসূচি বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বারবার উঠে আসে বিজেপি ও দিল্লি প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে চলেছে, অর্থনীতিরও বেহাল অবস্থা। আর এরকম এক পরিস্থিতিতেও বিজেপি সমগ্র দেশে ধর্মিয় হিংসায় ইন্ধন যুগিয়ে চলেছে। দেশে একের পর এক ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে দেওয়া হচ্ছে, বিকৃত করা হচ্ছে শতাব্দী প্রাচিন ইতিহাস। রাজধানীতে ৭ টি আসন জেতার পর সেখানে উপহার হল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। এতগুলো মানুষের মৃত্যু হওয়ার পরেও তার জন্য ক্ষমা চাননি, বদলে বাংলার মাটিতে এসেও করেছেন ক্ষমতার আস্ফালন। এই প্রসঙ্গে তিনি কটাক্ষ করেন, সিপিএম ও কংগ্রেসকেও। কংগ্রেসের সমগ্র ভারতব্যাপি সংগঠন থাকা সত্ত্বেও কোনোরকম প্রতিবাদ করেনি তারা, বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম-কংগ্রেস ঘোলা জলে মাছ ধরছে, কংগ্রেস সিপিএম ভাগাভাগি করে বিজেপিকে ভোট দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। রাজ্যে রাজ্যে তাড়ানো হচ্ছে, রাজধানীতে চলছে রাজ সন্ত্রাস। প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে গুলি মারার কথা। আর এই সমস্ত কিছু চুপ করে দেখছে প্রশাসন। এই অনুষ্ঠানে দলীয় কর্মিদেরও কড়া বার্তা দেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন দলই সর্ব্বোচ্চ। দলের থেকে নেতা কখনোই বড় নয়, দল যা বলবে তা শুনতে হবে। কোনো কোনো জেলায় কর্মিরা নিজের মত করে পাটরই করছেন, তা কখনোই করা যাবেনা। এমন করতে হলে বেরিয়ে যেতে হবে দল থেকে. এমনটাই বলেন মমতা।Latest posts by new_author (see all)
- লকআপ থেকে উধাও বন্দী - January 8, 2023
- নতুন বছরে সিদ্ধি বিনায়কে ভিকি-ক্যাটরিনা - January 6, 2023
- মেসির সংসার, হাতে বিশ্বকাপ, পাশে ১০ নম্বর জার্সিতে পরিবার - December 19, 2022