প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ বিলের বিরুদ্ধে মোদীকে কড়া চিঠি মমতার

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : দেশের বিদ্যুৎ আইনে কেন্দ্র যে বদল আনতে চলেছে তার বিরুদ্ধে সরব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খসড়া বিদ্যুৎ বিলকে ‘জনস্বার্থ ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী’ বলে মনে করেন তিনি। এই বিল নিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্র কোনও আলোচনা করেনি বলেও অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। অবিলম্বে ওই বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মমতা।

বিদ্যুৎ পরিষেবা সংবিধানের যৌথ তালিকাভুক্ত। কিন্তু, রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংশোধিত বিদ্যুৎ বিল নিয়ে কোনও আলোচনা না হওয়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী খসড়া বিদ্যুৎ বিলকে কৃষক ও অসংগঠিক ক্ষেত্রের স্বার্থ বিরোধী বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও বলেছেন, নতুন শুল্ক ব্যবস্থা মফস্বল ও গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যায় ফেলতে পারে।’

‘চিঠিতে প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ শুল্ক ও তা মেটানোর পদ্ধতিরও বিরোধীতা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ প্রস্তাবিত বিল অনুসারে, উপভোক্তাকে প্রথমে বিদ্যুতের বিল মেটাতে হবে। এরপর রান্নার গ্যাসের মতো পরিষবায় মেলা ভর্তুকি বাদ দেওয়া হবে। মোদীকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, ‘প্রথমেই বিরাট অঙ্কের টাকা সাধারণ মানুষের পক্ষে দেওয়া অসুবিধাজনক। এতে বিদ্যুৎ বিল খেলাপির সংখ্যা বাড়বে। সাধারণের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ রাখাই অসুবিধাজনক হয়ে পড়বে।’

রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর অনুযায়ী, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ বিলে বলা হয়েছে যে, শুল্ক নির্ধারণে রাজ্যের আর কোনও ভূমিকা থাকবে না। কেন্দ্র রেগুলেটরি কমিশন গঠন করবে। তারাই কেন্দ্রীয়ভাবে শুল্ক নির্ধারণ করবে। মুখ্যমন্ত্রীর মনে করেন, এই পদক্ষেপ রাজ্যের আওতায় অযাচিত হস্তক্ষেপ। চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জানিয়েছেন, ‘বর্তমানে রাজ্য নিজস্ব পরিকাঠামো ও সীমাবদ্ধতা বিচার করে বিদ্যুতের শুল্ক নির্ধারণ করতে পারে। কিন্তু, কমিশন শুল্ক নির্ধারণ করলে তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় হস্তক্ষেপ হবে। রাজ্যের পক্ষে কেন্দ্র নির্ধারিত শুল্কনীতি মেনে নেওয়া অসম্ভব।’

খসড়া বিলে উল্লেখ রয়েছে, বিদ্যুৎ সংযোগ, সরবরাহ ও ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধের মীমাংসা করতে গঠন করা হবে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ চুক্তি প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বা ইসিইএ। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ইতিমধ্যেই একটি কেন্দ্রীয় রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষ রয়েছে। প্রস্তাবিত ইসিইএ-তে রাজ্যের কোনও প্রতিনিধি থাকবে না। তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী এই পদক্ষেপ মেনে নেওয়া কার্যত অসম্ভব বিষয়।

এচাড়াও প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়েছে, রাজ্যগুলোকে অপ্রচোলিত শক্তি ক্রয় করতে হবে। মোদীর দেওয়া চিঠিতে এর প্রতিবাদ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এর ফলে রাজ্যের ঘাড়ে বাড়তি আর্থিক চাপ পড়বে যা পশ্চিমবঙ্গে ক্ষেত্রে বহন করা সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube