
নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : সন্তান পেতে এখন অনেকেই ফার্টিলিটি ক্লিনিকের সহায়তা নিয়ে থাকেন। বর্তমান দিনে এই পদ্ধতি খুবই সাধারন একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এবার ফার্টিলিটি ক্লিনিকের সহায়তায় সন্তান লাভ করতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হলেন তথ্য প্রযুক্তি বিভাগে কর্মরত এক দম্পতি। তাঁরা ‘সারোগেট মা’র সঙ্গে সন্তান ধারণের জন্য ৮ লক্ষ টাকার চুক্তি করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সন্তান পাওয়া তো দূরের কথা জন্ম দেওয়ার আগেই চম্পট দিলেন ‘সারোগেট মা’। ওই দম্পতির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু ‘সারোগেট মা’-র মুখে প্রতারণার কারন শুনে চক্ষু চড়কগাছ হয় তদন্তকারী আধিকারিকদের।
কয়েকদিন আগেই অভিযুক্ত ওই ‘সারোগেট মা’ কে গ্রেফতার করে পুলিশ। কাশ্মীরা বিবি নামের ওই মহিলাকে দফায় দফায় জেরা শুরু করে তদন্তকারী আধিকারিকেরা। কিন্তু প্রথম দিকে সন্তান নিয়ে কোন ভাবে মুখ না খুললেও পরে চাপের মুখে পড়ে তিনি জানান, গর্ভধারণের মাস ৬-এর মধ্যেই তাঁর গর্ভপাত হয়ে যায়। সেই সময় তাঁর সাথে কেউ না থাকায় তিনি নদীর জলে গিয়ে ভ্রুণটিকে ফেলে দিয়ে আসেন। কিন্তু ৬ মাসের সন্তানের গর্ভপাতের পরে কিভাবে তাকে নিজে নিজেই বের করে ফেলে দেওয়া সম্ভব? এখন সে বিষয়টি নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এরপরেই ৪ টি দলে বিভক্ত হয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কাশ্মীরার মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন ধরে তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালাতেই মেলে নয়া তথ্য। কাশ্মীরা বিবি সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে গিয়ে নাম পরিবর্তন করে ঠিকাদারির কাজ করত। সেখানে তিনি ‘মীনা হালদার’ বলে নিজের পরিচয় দেন। গত বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁকে সেখানেই কাজ করতে দেখা যায় বলে জানান সেখানকার বাসিন্দারা। এরপর ফের তল্লাসি চালিয়ে কাশ্মীরার ঘনিষ্ঠ রবিউল মোল্লারও খোঁজ পাওয়া যায়। তাঁর মোবাইয়ে কাশ্মীরার মা অম্বিয়া বিবির ছবি দেখে তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে একটি শিশুর জন্ম দেয় কাশ্মীরা। ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালের কর্মীদের কাশ্মীরার ছদি দেখালে তাঁরা দাবি করেন, কাশ্মীরা বিবি ও মীনা হালদার একই মহিলা। এইসমস্ত ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সব স্বীকার করে নেন কাশ্মীরা। তিনি জানান, “স্বামী মারা যাওয়ার পর টাকার জন্য সারোগেট মা হওয়ায় প্রতিবেশীদের তিরস্কারের শিকার হই। তাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাই।ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে মৃত সন্তান জন্ম দেওয়ায় নদীতে ভাসিয়ে দিই।” প্রতারিত ওই দম্পতি জানান, কাশ্মীরা বিবির সাথে ৮ হাজার টাকার চুক্তি হলেও প্রথমে তিনি আমাদের থেকে ৩.৭৫ লাখ টাকা নেয়। প্রথম দিকে তিনি আমাদের সাথে ভালো যোগাযোগ রাখলেও পরে একেবারেই যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। লক্ষ্মীকান্তপুরের মথুরাপুর থেকে অভিযুক্ত কাশ্মীরার খোঁজ না পেয়ে তাঁকে খুঁজতে গেলে, কাশ্মীরা আর সেখানে থাকে না বলে জানায় প্রতিবেশীরা। এরপরেই পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেন ওই দম্পতি। অবশেষে পুলিশের সহায়তায় এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ধরা হয় কাশ্মীরা বিবিকে।Latest posts by news_time (see all)
- পথের সাথী “মিশন উজালা” - March 26, 2023
- মুম্বাইয়ের স্কুলে শিক্ষিকা কারিনা - March 26, 2023
- প্রধানমন্ত্রীর “মন কি বাত” - March 26, 2023