
নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : প্রতি বছর মহালয়ার দিন ভোর থেকে দক্ষিণেরশ্বরে ভিড় জমাতে শুরু করেন হাজার হাজার মানুষ। কেউ আসেন তর্পণের জন্য, কেউ বা আসেন মন্দিরে মাতৃদর্শন ও পুজো দেওয়ার জন্য। তার জেরে বিকাল ছাড়িয়ে রাত পর্যন্ত লম্বা লাইন পড়ে আয় দক্ষিণেশ্বরে। আর ভোর থেকে বেলা পর্যন্ত দক্ষিণেশ্বরের ঘাটে ঘাটে ভিড় জমান হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু এবারে কোভিড কালে দক্ষিণেশ্বর মন্দির কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্দিরের নিজস্ব ঘাটগুলিতে কাউকে তর্পণ করতে দেওয়া হবে না। এমনকি মায়ের মন্দির দুপুর সাড়ে ৩টে পর্যন্ত সেদিন বন্ধ থাকবে। এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ইতিমধ্যেই নানা মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। নানা মহক থেকেই দক্ষিণেশ্বর মন্দির কমিটিকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। তারই মধ্যে কলকাতা পুলিশ জানিয়ে দিল মহালয়ার দিন গঙ্গার ঘাটে ঘাটে তর্পণের যে ব্যবস্থা থাকবে এই বছরও তা থাকবে। তবে সকলকে কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে।
জানা গিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার কলকাতা পুরনিগমের সঙ্গে পুজো নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। ডাকা হয়েছে দমকল ও সিইএসসিকেও। প্রতি বছরই পুজোর এক-দেড় মাস আগে এই বৈঠক হয়। এই বছর আশ্বিন মাস মল মাস পড়ে যাওয়ায় মহালায়ার ৩৫ দিন বাদে হচ্ছে দুর্গাপুজো। তাই বৈঠকের দিনক্ষনও কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে কলকাতা পুরনিগমের ইঞ্জিনিয়ারদের ছাড়াও রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতর, কেএমডিএ, বন্দর এবং এইচআরবিসি’র আধিকারিকদেরও ডাকা হয়েছে। বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। সেখানে মহালয়ার তর্পণের বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা হবে। তবে দক্ষিণেশ্বরের পথে যে কলকাতা পুলিশ হাঁটা দেবে না সেটা ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
সরকারিভাবে এখনও ঘোষিত না হলেও কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে গঙ্গার ঘাটে মহালয়ায় পিতৃতর্পন নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে কলকাতা পুরনিগম ও পুলিশ। গঙ্গার ঘাটে কেউ যদি একা একা পিতৃতর্পন করতে আসেন তাঁকে বাধা দেওয়ার কোনও আইন বা নির্দেশ কোনওটাই প্রশাসনের কাছে নেই। তবে পুরসভার তরফে তর্পনকারীদের বার্তা, ছয় ফুট দূরত্ব মেনে বসে বা দাঁড়িয়ে পূর্বপুরুষের উদ্দেশে মন্ত্রোচ্চারণ করুন। পুরোহিত বা তর্পনকারীদের মুখে যথাসম্ভব মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছে পুলিশ। মহালয়ার ভোরে গঙ্গার ঘাটগুলিতে আসা হাজার হাজার পূণ্যার্থী যাতে নিরাপদে ও সুরক্ষার সঙ্গে তর্পন করতে পারেন তার জন্য সামগ্রিক আয়োজন সম্পূর্ণ করতে ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ। একইসঙ্গে জলে দুর্ঘটনা ঘটলে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ও ডুবুরি টিমের ব্যবস্থা রাখার প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজোর আয়োজনে পক্ষে সওয়াল করে পুরমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘রাস্তা, আলো, জল, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতেই মঙ্গলবারের প্রস্তুতি বৈঠক। উৎসবের ক’দিন কোভিডের স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে মণ্ডপে ও রাস্তায় দর্শনার্থীদের মেনে চলতে পুরসভা সাহায্য করতে পারে তা নিয়েও ওই বৈঠকে কথা হবে। মনে রাখতে হবে, মানুষের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সবার আগে, সেই ব্যবস্থাই করা হবে। পুজোর ক’দিন রাস্তায় পুরনিগমের স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে বিশেষ ইউনিট নামিয়ে করোনা মোকাবিলায় দর্শনার্থীদের সাহায্য ও সুরক্ষা দেওয়ার ভাবনাও রয়েছে।’
- লকআপ থেকে উধাও বন্দী - January 8, 2023
- নতুন বছরে সিদ্ধি বিনায়কে ভিকি-ক্যাটরিনা - January 6, 2023
- মেসির সংসার, হাতে বিশ্বকাপ, পাশে ১০ নম্বর জার্সিতে পরিবার - December 19, 2022