
হাইকোর্টের নির্দেশে বাড়ি ফিরে দুষ্কৃতীদের ভয়ে এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না উত্তর দিনাজপুরের করনদীঘি থানার বিহিনগরে এক পরিবার । জমি মাফিয়ারা তাণ্ডব চালিয়ে বাড়ির সমস্ত কিছু তছনছ করে দিয়েছে ।পাশাপাশি অভিযোগ উঠছে, লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁদের । ৩৪ নাম্বার জাতীয় সড়কের পাশে থাকা এক পরিবার আজ দিশেহারা ।
উত্তর দিনাজপুর জেলার করনদীঘি থানার বিহিনগরে রমরমিয়ে চলছে জমি মাফিয়াদের তান্ডব । জমি মাফিয়াদের চক্রান্তে গৃহহারা হতে হয়েছে এক পরিবারকে ৷ অভিযোগ উঠছে, মাফিয়ারা তৃণমূলের ছত্রছায়ায় থাকার ফলে এদের বিরুদ্ধে পুলিশ পদক্ষেপ নিতে নারাজ ।
পর্যায়ক্রমে পুলিশ প্রশাসনের দারস্থ হয়েও কোনও ফল না পেয়ে হাইকোর্টের দারস্থ হয় পরিবারটি । বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার নির্দেশে পুলিশ পাহারায় তাঁরা বাড়িতে ফিরলেও, বাড়িতে থাকার অবস্থা নেই তাদের । বাড়িতে আসবাব নেই, খোয়া গেছে সমস্ত মূল্যবান সামগ্রী, সব কটি ঘরে দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের ছাপ পরিষ্কার । কাটা গিয়েছে বিদুৎ সংযোগ, বাড়িতে করা বিদ্যুতের সমস্ত ওয়ারিং কেটে ছিড়ে টুকরো টুকরো করা হয়েছে । জলের ট্যাংক ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাইপ লাইন ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, এমনকি শৌচালয়ে সিমেন্ট পাথর বালির ঢালাই করে সিল করা হয়েছে ।
পরিবারের অভিযোগ, কার্যত পুলিশি পাহারায় থেকেও, লাগাতার করনদিঘি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সহ সভাপতি লুৎফর রহমান ওরফে লেটু ও তার ভাই ফিরোজ খান ওরফে সেন্টুর হুমকির মুখে পড়ছেন তাঁরা ৷ দীর্ঘদিন পুলিশের কাছে ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও এলাকায় প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারা । পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতেও ভয় পায় বলে জানাচ্ছেন নিগৃহীত পরিবার । জমি মাফিয়াদের হুমকি আর বাহুবলীদের ভয়ে দিশেহারা পরিবার করছে ন্যায় বিচারের দাবি ৷
এদিকে এই বিষয় নিয়ে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির দাবি, আইন আইনের মতো চলবে আমরা এটা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি । অন্যদিকে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা এইসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ পাশাপাশি তাদের দাবি, পুলিশ বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখেছে, ও তাঁরা নির্দোষ দেখেই গ্রেফতার করেননি ।
এমন অবস্থায় বারবার করনদিঘি থানার দারস্থ হয়েছেন এই পরিবার । পুলিশের সাহায্য না পেয়ে পর্যায়ক্রমে পুলিশ ও প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়েও আবেদন করেছেন । পরিবারের শিশুদের সামাজিক অধিকারের দাবীতে সাহায্য চেয়েছেন রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাছেও । কেউ সাহায্য করেননি বলে অভিযোগ পরিবারের ।
বাধ্য হয়ে তাঁরা দারস্থ হয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের । সেখানে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দেন অবিলম্বে পরিবারকে পুলিশি পাহারায় বাড়ি ফেরাতে হবে । ৭ দিন ২৪ ঘন্টা দিতে হবে পুলিশি পাহাড়া ৷ সেই নির্দেশ পেয়ে পুলিশি পাহাড়ায় বাড়ি ফিরেছে ওই পরিবার ৷
তবে বাড়ি ফিরে নিজেদের বাড়ি ঘরের অবস্থা দেখে স্তম্ভিত তারা । পাশাপাশি অভিযোগ উঠছে, লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁদের । তাঁদের মন্তব্য, হুমকি আসছে, পুলিশ তো ৭ দিন, তারপর কী হবে এই পরিবারের ? এমত অবস্থায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে কেনও এইসব মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছেনা পুলিশ প্রশাসন? কেন এই ধরনের বাহুবলী জমি মাফিয়াদের নিজেদের নবঘোষিত ব্লক কমিটিতে স্থান দিয়ে তাদের আরও শক্তিশালী করছে শাসকদল? কেন ন্যায় বিচার পাবে না একটা পরিবার?
- রেলযাত্রীর চুরি যাওয়া চার লক্ষ টাকার সোনার অলঙ্কার উদ্ধার করল রেলপুলিশ - June 2, 2023
- সরকারি ভাবে বাস ভাড়া না বাড়ালে অকাল মৃত্যু হবে বেসরকারি বাস পরিবহনের! - June 2, 2023
- কুড়মি সমাজের ঝাণ্ডা অভিযানের কর্মসূচি অব্যাহত - June 2, 2023