“অবশেষে বিচার পেল নির্ভয়া”, ফাঁসী ৪ দোষির

নিউজটাইম ওয়েবডেস্ক : অবশেষে শান্তি। ৭ বছরের ‌যুদ্ধের অবসান হল ২০শে জানুয়ারী ২০২০। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাজধানীতে ঘটে ‌যাওয়া নির্ভয়ার নৃশংস ধর্ষন ও হত্যার ঘটনায় কেঁপে ওঠে গোটা দেশ। উত্তর থেকে দক্ষিণ জুড়ে গোটা দেশে ওঠে প্রতিবাদের ঝড়। চুড়ান্ত বিক্ষোভের সম্মুখীন হয় তৎকালীন সরকার। এই সময় থেকেই শুরু হয় এই মামলা। চলে টানা ৭ বছর। মামলার শুরু থেকেই সাধারণ স্তর থেকে মৃত্যুদন্ডের আর্জি জোরালো থাকলেও, আসামীদের আইনজাবি এ পি সিং নানান ফিকিরে বারংবার পেছতে থাকে ফাঁসীর দিন। অবশেষে আইনত সমস্ত পন্থা ব্যবহার করে ফেলার পর, শুক্রবার সকালে ৪ আসামীর ফাঁসী হল তিহার জেলে, ফাঁসুড়ে পবনের হাতে।

নির্ভয়া কান্ডে অভি‌যুক্ত ৬ জন, ‌যার মধ্যে একজন নাবালক হওয়ায় ৬ মাসের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে ‌যান। এবং অন্য একজন ২০১৩ সালে হাজতেই আত্মহত্যা করেন। ২০১২ সালে ঐ রাতে বন্ধুর সাথে সিনেমা দেখে ফেরার পথে একটি চলন্ত বাসের মধ্যে গণ ধর্ষন করা হয় ২৩ বছরের প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে। কয়েকদিন মৃত্যুর সাথে কঠিন লড়াই করে ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে নির্ভয়া।

আইনি ফিকিরে বারবার ছাড়া পেয়ে ‌যাচ্ছিল দোষিরা, এবং বারবার হতাশ হয়ে পড়ছিলেন নির্ভয়ার পরিবার।গতকাল রাত অব্দি ফাঁসী রোখার চেষ্টা চালিয়ে ‌‌যান অপরাধীরা। তবে অত্যন্ত তৎপরতার সাথে সেই সমস্ত আর্জি খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত। আদালতের তৎপরতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। তিহার সুত্রে খবর, গত রাতের খাওয়ার খাননি কেউই। এমনকি ঘুমোননি সারা রাত। 

বেশ কয়েকবার সংশয়ও জেগেছিল ‌যে আদৌ শাস্তি হবে কিনা দোষিদের। এদিন সংবাদ মাধ্যমকে আশাদেবি জানান, এই লম্বা সময় জুড়ে অপেক্ষা অত্যন্ত পীড়াদায়ক হলেও অবশেষে সুবিচার পেয়ে খুশি তিনি। স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি এদিন সংবাদমাধ্যমকে জানান, নির্ভয়া মামলা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়্ দেখিয়ে দিয়েছে ভারতীয় দন্ডবিধীতে ঠিক কতটা ফাঁক এখনও রয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রের তৰফ থেকে এই সমস্ত ফাঁক ফোঁকর গুলি ‌যাতে না থাকে, এবং ন্যায় বিচার পেতে ‌যেন আর কাউকে এরম অপেক্ষা করতে না হয়। 

 ২০১২-র ডিসেম্বরের ঐ রাতে ৬ জনের মধ্যে একজন ছিল নাবালক ‌যাকে ৩ বছরের সা‌জার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর একটি স্বেচ্ছাসেবি সংস্থার সাথে থেকে রান্না শেখে সে। বর্তমানে দক্ষিণ ভারতের কোনো এক উপকূলবর্তি এলাকায় রাঁধুনীর কাজ করে সে। নিজের নাম বদলে নতুন জীবন শুরু করেছে সে।

শুক্রবার ফাঁসীর আদেশ কা‌র্যকরী হওয়ার পর ট্যুইট করেন প্রধানমন্ত্রী। ট্যুইটে তিনি জানান, ফাঁসীতে সুবিচার হয়েছে এই দীর্ঘ অপেক্ষার। মহিলাদের সম্মান রক্ষা আমাদের সবথেকে বড় কর্তব্য। সর্বক্ষেত্রে নারী শক্তির পরচয় দিয়েছে, এবার আমাদের দায়িত্ব এমন এক দেশ গড়া ‌যেখানে নারীজাতি পাবে সমান অধিকার। 

Inform others ?
Share On Youtube
Show Buttons
Share On Youtube
Hide Buttons
Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial
Facebook
YouTube